মঙ্গলবার ১৪ জানুয়ারী ২০২৫ - ২০:৩৩
হযরত আলী (আ.)

হাওজা / রোগ ব্যাধি থেকে শিফা ( আরোগ্য ) এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য হযরত আলী ( আ ) থেকে বর্ণিত একটি দুআ:

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, সাইয়েদ ইবনে তাঊস মুহাজ গ্রন্থে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন: ইবনে আব্বাস (রা) বলেছেন: একদিন আমি হযরত আমীরুল মু'মিনীন ইমাম আলীর (আ) কাছে উপবিষ্ট ছিলাম। তখন‌ এক ব্যক্তি তাঁর কাছে আসল যার গায়ের রং ছিল ফ্যাকাশে (বা নষ্ট হয়ে গিয়েছিল) এবং বলল: " হে আমীরুল মু'মিনীন !

আমি সবসময় অসুস্থ থাকি এবং আমার দেহে অনেক ব্যাথা। তাই আমাকে এমন দুআ শিখিয়ে দিন যা পাঠ করা থেকে আমি আমার রোগ ও অসুস্থতায় সাহায্য নিতে পারি। " তখন হযরত আলী (আ) বললেন: " যখন হাসান ও হুসাইন অসুস্থ ছিল তখন মহানবীকে (সা) হযরত জিব্রাইল (আ) যে দুআ শিখিয়েছিলেন আমি তা তোমাকে শিখাব। " দুআটি :

إِلَهِي كُلَّمَا اَنْعَمْتَ عَلَيَّ نِعْمَةً قَلَّ لَكَ عِنْدَهَا شُكْرِي وَ كُلَّمَا اِبْتَلَيْتَنِي بِبَلِيَّةٍ قَلَّ لَكَ عِنْدَهَا صَبْرِي فَيَا مَنْ قَلَّ شُكْرِي عِنْدَ نِعْمَتِهِ فَلَمْ يَحْرِمْنِي وَ يَا مَنْ قَلَّ صَبْرِي عِنْدَ بَلاَئِهِ فَلَمْ يَخْذُلْنِي وَ يَا مَنْ رَآنِي عَلَى اَلْخَطَايَا فَلَمْ يَفْضَحْنِي وَ يَا مَنْ رَآنِي عَلَى اَلْمَعَاصِي فَلَمْ يُعَاقِبْنِي عَلَيْهَا صَلِّ عَلَى مُحَمَّدٍ وَ آلِ مُحَمَّدٍ وَ اِغْفِرْ لِي ذُنُوبِي وَ اِشْفِنِي مِنْ مَرَضِي هَذَا إِنَّكَ عَلَى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيرٌ.

     হে ইলাহী (হে আমার মা'বূদ) ! আপনি আমাকে যখনই কোনো নেয়ামত দিয়েছেন ব্যস তখনই ঐ নিয়ামতের জন্য  (আপনার প্রতি) আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি নি (আপনার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা বোধই ছিল না‌); আর যখনই আপনি আমাকে বিপদে আপতিত করেছেন (পরীক্ষা করার জন্য অথবা শাস্তি স্বরূপ) তখন আমি ধৈর্য ধারণ (সবর) করি নি (অর্থাৎ আমার ধৈর্যের অভাব ছিল)। অত:পর হে ঐ মহান সত্তা ! যাঁর প্রদত্ত নেয়ামতের বরাবরে আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ ছিল অতি অল্প, তুচ্ছ ও নগণ্য কিন্তু এতদসত্ত্বেও যিনি আমাকে বঞ্চিত করেন নি (তাঁর নেয়ামত সমূহ থেকে)। হে ঐ মহান সত্তা! যিনি আমাকে বিপদে আপতিত করলে (উক্ত বিপদাপদে পতিত হওয়ার ফলে) আমার ধৈর্য্যচ্যুতির জন্য আমাকে সাহায্য করা থেকে বিরত থাকেন নি; হে ঐ মহান সত্তা! যিনি আমাকে অন্যায় ও ভুল-ভ্রান্তির ওপর আমাকে প্রতিষ্ঠিত দেখেও আমার দোষ-ত্রুটি প্রকাশ করে আমাকে লজ্জিত,  অপদস্থ, অপমানিত ও লাঞ্ছিত করেন নি; হে ঐ মহান সত্তা যিনি গুনাহ ও পাপাচারের ওপর আমাকে প্রতিষ্ঠিত দেখতে পেয়েও আমাকে আমার পাপ ও গুনাহের জন্য শাস্তি দেন নি; হে আল্লাহ! হযরত মুহাম্মদ ও আল-ই মুহাম্মদের (হযরত মুহাম্মদের নিকটাত্মীয় ও রক্তজ বংশধর আহলুল বাইত) ওপর দরূদ ও সালাত প্রেরণ করুন, আমার সকল গুনাহ-খাতা (পাপ) মাফ করে দিন এবং আমাকে আমার এই রোগ ও অসুখ থেকে শিফা (আরোগ্য) দিন; নিশ্চয়ই আপনি সবকিছুর ওপর ক্ষমতাবান (অর্থাৎ সর্বশক্তিমান) ।

ইবনে আব্বাস (রা) বলেন: " (এর ঠিক) এক বছর পরে আমি ঐ ব্যক্তিকে পুনরায় দেখতে পেলাম  যে  তার দেহের রং খুলেছে ও সুন্দর হয়েছে এবং তা গৌরবর্ণ (লাল) ধারণ করেছে। সে আমাকে বলল: (আমার দেহে) এমন কোনো ব্যাথা ছিল না যা এ দুআ পাঠ করার পর ভালো হয় নি (এ দুআ পাঠ করার কারণে আমার দেহের যে ব্যাথাই থাকুক না কেন তা সেড়ে গেছে)। আর এমন কোন পরাক্রমশালী (অত্যাচারী যালেম) বিদ্যমান নেই (ছিল না) যাকে আমি ভয় করি ও  ডরাই অথচ তার সামনে উপস্থিত হয়ে এ দুআটি পাঠ করা মাত্রই মহান আল্লাহ তার (সেই যালেমের) অনিষ্ট ও ক্ষতি আমা হতে দূর করে দেন নি ।

(দ্রঃ মাফাতীহুল জিনান)

অনুবাদ : মুহাম্মদ মুনীর হুসাইন খান

১৪-১-২০২৫ (১৩ রজব, ১৪৪৬ হি)

Tags

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha